যারা আমার বুক খালি করল তাদের শাস্তি চাই: আবরারের মা - News247

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, October 8, 2019

যারা আমার বুক খালি করল তাদের শাস্তি চাই: আবরারের মা



বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের মৃত্যুতে শোকের মাতম বইছে তার গ্রাম কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে। পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করে স্বজন, গ্রামবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে আছে আকাশ-বাতাস। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা রোকেয়া খাতুন।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ফাহাদের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রায়ডাঙ্গায় পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসী সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবরারের স্বজনরা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। লাশ সামনে রেখে গ্রামের তরুণরা মিছিল শুরু করেন। আবরারের খুনিদের বিচার দাবি করেন।
ছেলের অকাল মৃত্যুতে বিলাপ করতে করতে আবরারের মা বলেন, ‘আমার বেটা লাখে একটাও হয় না রে...। সবার ঘরে বেটা থাকতে পারে, আমার বেটার মতো বেটা ছিল না। আমার বেটা কোনো দিনও জোরে (উচ্চস্বরে) কারও সঙ্গে কথা বলে নাই। কোনো রাজনীতির মিছিলে যায় নাই। যেইখানে রাজনীতির আলাপ করে সেইখানেও যায় নাই। আমার বেটা শুধু লেখাপড়া নিয়াই থাকত।’
মায়ের আর্তি, আমার বেটারে কেড়ে নিয়ে যারা আমার বুক খালি করল আমি তাদের শাস্তি চাই।
ফাহাদের স্মৃতি আওড়াতে আওড়াতে রোকেয়া খাতুন জানান, তার ছেলে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চারটিতেই সুযোগ পান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মেধা তালিকায় ১৩ নম্বরে ছিলেন। সরকারের কাছে ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িতদের যথাযথ শাস্তির আর্জি জানান এ মা।
ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহও। তিনি বলেন, ৬ ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে আমার ছেলেকে খুন করা হযেছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এটি তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
সকাল ১০টার দিকে রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে ফাহাদের তৃতীয় ও শেষ জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

No comments:

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages