আবরারের ভাই ফাইয়াজকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন তার বাবাকে তার নাম উল্লেখ করে হুমকি দেয়া হয়েছে।এ বিষয়ে ফাইয়াজ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, আজকে Additional SP (উনি বলেন উনার নাম মোস্তাফিজুর রহমান) কোথা থেকে সাহস পায় আমার গায়ে হাত দেয়ার? আমার ভাবি কে মারছে? নারী দের গায়ে নিষ্ঠুরভাবে হাত দেয়? এই চাটুকার দের কি বিচার হবে না? তিনি কালকে ২মিনিটে জানাযা শেষ করতে বলেন কিভাবে? যেই ছাত্রলীগ মারল তারা কেন সর্বত্র?
আমার বাবাকে হুমকি দেয়া হয়েছে আপনার আর এক ছেলে ঢাকা থাকে আপনি কি চান তার ক্ষতি হোক... গ্রামে বলা হয়েছে কেও কিছু করলে ১ সপ্তাহ পর গ্রামের সব পুরুষ জেলে থাকবে। বিচার চাই, আমি বিচার চাই, নয়তো আমাকে মেরে ফেলুন বাবা মা কষ্ট একবারে পাবে।
ফাইয়াজের স্ট্যাটাসের পর এটি অল্প সময়ের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
এর আগে নির্যাতনে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর রায়ডাঙ্গায় আবরার ফাহাদের বাড়িতে যান বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। আর এতে আবরারের ছোট ভাইসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে সংবাদ পাওয়া যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুয়েট উপাচার্য রায়ডাঙ্গায় মাত্র ১৫ মিনিটের মতো অবস্থান করেন। পরে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
স্থানীয় সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম তারিক জানান, বুয়েট ভিসি শুধুমাত্র আবরারের কবর জিয়ারত করতে পেরেছেন। তিনি আবরারের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাকে বাধা দেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে করে আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ, তার ফুপাতো ভাইয়ের স্ত্রী ও আরো একজন নারী আহত হন।
এর আগে সকালে ছাত্রলীগ নেতাদের পিটুনিতে মারা যাওয়া বুয়েট ছাত্র আবরারকে দাফনের এক দিন পর কুষ্টিয়ায় তার বাড়ির উদ্দেশে যান ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার ফাহাদ। এর জেরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।
১৯ জনকে আসামি করে আবরারের বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment